এখন ইনভেস্টমেন্ট করে অনলাইন থেকে ইনকাম করার যেসব সোর্স আমি আজ অব্দি পেয়েছি, তার সবই আসলে স্ক্যাম। আমার জানামতে ভালো কোনো প্ল্যাটফর্ম পেলাম না যেখানে ইনভেস্ট করে প্রফিট পাওয়া যাবে। এক্সচেঞ্জ গুলোতে স্টেকিং করে কিছু প্রফিট পাওয়া যায় যা খুবই নগন্য। এবার আসেন অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম গুলো। আপনাদের কি কারো এস পি সি বা জিকা বাজার, অথবা রিং আইডির কথা মনে আছে? আমার এলাকার প্রায় অনেক মানুষ এসব প্লাটফর্ম গুলাতে ইনভেস্ট করে স্ক্যাম এর পাল্লায় পরেছে। সব ধরনের MLM & Ponzi Scheme সাইট গুলাই স্ক্যাম। এগুলা প্রথম দিকে সবাইকে পেমেন্ট করে, পরে আস্তে আস্তে পেমেন্ট করা বন্ধ করে দেয়।
কি আর বলব ভাই মনে করিয়ে দিলেন দুঃখের কথা। তাই নিজের কিছু ইতিহাস আপনাদের সাথে শেয়ার করি কারণ এই ধরনের স্ক্যাম সাইট অতীতে ছিল বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও আসবে হয়তো নতুন মোড়কে। তাই আমাদের সাবধানতা অতীব জরুরী।
ঘটনা কয়েক বছর আগের যখন আমি খুব করে চেয়েছিলাম আমার নিজের টাকায় একটা ল্যাপটপ হোক, যদিও সে স্বপ্ন এখনো পূরণ হয় নাই, ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে হবে। পাশের বাড়ির এক কাকা ইভ্যালিতে, আলেশা মার্ট এ ইনভেস্ট করে দুইটা বাইক, টিভি, ফ্রিজ ও ওয়াশিং মেশিন কিনেছিল। তার সাথে প্রায়ই কথা হতো এবং সে অনেককেই ইনভেস্ট করার জন্য উপদেশ দিয়েছিল। যদিও আমি এইসব Ponzi, MLM সাইট সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন ছিলাম কেননা আমার অনলাইন জার্নির শুরুর দিকে কয়েকবার ছোট ছোট স্ক্যামের শিকার হয়েছি এগুলো থেকে। তাই কেউ আমাকে রিং আইডি বা এই ধরনের কোন সাইটের কথা বললে আমি নিজেই বলতাম দয়া করে ইনভেস্ট করিস না দিন শেষে পস্তাবি। আমি অনেক ফ্রেন্ডকেই এই ধরনের সাইটে ইনভেস্ট করতে না বলেছি। কিন্তু ওই ভাইয়ের কথায় আর নিজে সতর্ক না থাকায় জীবনের সবচেয়ে বড় স্ক্যাম এর শিকার হয়েছি। সবশেষে নিজের জমানো বিটকয়েন সেল করে ইঅরেঞ্জে ৫২ হাজার টাকা ইনভেস্ট করি। আরেকটু নিশ্চিত ছিলাম যে মাশরাফি বিন মুর্তজা ইঅরেঞ্জের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ছিল এবং সংসদ সদস্য। তাই কেন জানি মনে হচ্ছিল হয়তো পার পেয়ে যাব। আমি চাইছিলাম একটু ভালো কনফিগারেশন এর ল্যাপটপ তাই একটা কোর আই ফাইভ এর ল্যাপটপ অর্ডার দেই সাথে একটি অপ্পো ফোন। তারপর আর কি বাকিটা ইতিহাস। আমিও ইনভেস্ট করলাম আর তারপরে থেকেই সরকার সহ সবাই সচেতন হওয়া শুরু করলো বাট এতদিন তারা নিশ্চিন্তে Ponzi সাইট প্রমোট করে গেছে।
মাঝে আমাদের একটি ফ্রিজের জন্য বাবাকে বললাম ইভালিতে অর্ডার দিতে পারো, বাবা বলল 10 হাত দূরে যা। তখনই বুঝতে পারছিলাম হয়তো কপালে খারাপ কিছু আছে। এরপর আর কি স্টুডেন্ট লাইফে তখন নিঃস্ব হয়ে গেলাম। এতটা সচেতন থাকার পরেও আমি নিজেও এই ভুলটা করেছি।
আশা করি এখানে যারা আছেন সবাই এই ধরনের বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন। তারপরও আপনাদের মাথায় রাখতে হবে নতুন ভাবে এই ধরনের সাইটগুলো দিনে দিনে আসতেই থাকবে কারণ স্ক্যামার রা তো আর ভালো হয়ে যাবে না। তাই নিজের মূলধন ইনভেস্ট করার আগে দশবার ভেবে দেখবেন আর সন্দেহ হলে এড়িয়ে যাবেন। আমার এই ভুল থেকে আমি যেটুকু শিক্ষা পেয়েছি আমি চাই আপনারা সেই ভুল না করেও নিজের সতর্কতা সম্পর্কে আরও সচেতন হন।