অর্থ ব্যবস্থাপনার কৌশল
একটি সফল ট্রেড করতে কি কি বিষয়ের উপর অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত তা নিয়ে অনেকেই তর্ক করবে। এর মধ্যে দুটি হলো
১. ট্রেডে ক্রয় বা বিক্রয়ের সেরা সময় জানতে ট্রেড চার্ট বোঝা ২. অর্থ ব্যবস্থাপনা আপাতত আমরা কিছু সময়ের জন্য এই বিষয়ে আমাদের মতামতগুলো একপাশে রেখে আমাদের অর্থ ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা এবং কৌশল সম্পর্কে কথা বলতে পারি। আমি মনে করি একটি ট্রেড থেকে সফলভাবে লাভ করতে এবং ক্ষতি কমাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন বিষয়ের একটি হলো অর্থ ব্যবস্থাপনা। আমরা যতই অভিজ্ঞ হই না কোনো ট্রেড সম্পর্কেই ১০০ শতাংশ নির্ভুল হওয়া সম্ভব নয়। বাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞতা এবং অর্থ ব্যবস্থাপনার দক্ষতার সাথে একটি সমন্বয় কৌশল আমাদের ক্ষতির মাএা ৯০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারে।
আমাদের মধ্যে অনেকেই সক্রিয়ভাবে ক্রিপ্টো মার্কেটে ট্রেড করি, তাই আমাদের সকলের একটি অর্থ ব্যবস্থাপনার কৌশল থাকা উচিত।
আসুন আমরা আমাদের অর্থ ব্যবস্থাপনার কৌশলটি এখানে শেয়ার করি যাতে আমরা আমাদের ট্রেডিং আচরণ অনুযায়ী একটি নিখুঁত অর্থ ব্যবস্থাপনার কৌশল বিকাশ বা সমন্বয় করতে পারি। আমি এখন পর্যন্ত যে অর্থ ব্যবস্থাপনা কৌশলটি ব্যবহার করছি তা শেয়ার করতে যাচ্ছি।
বৈচিত্র্যময় পোর্টফোলিও: আমি জানি ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগ করার সময় অনেকেই বিটকয়েনকে প্রথম অগ্রাধিকার দেন কিন্তু আমি বিটিসি মার্কেটে ট্রেড করি না। আমার বেশিরভাগ ট্রেডই অল্টকয়েন মার্কেটে হয় এবং এখানে আমি আমার পোর্টফোলিওকে নিম্ন ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প থেকে উচ্চ-ঝুঁকির প্রকল্পগুলিতে ভাগ করে ট্রেড করি।
- নিম্ন ঝুঁকি: এই তালিকায় থাকা কয়েনগুলো আমি সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী ট্রেড করে থাকি। আমার মতে যেসব কয়েনের মার্কেট ক্যাপ ১ বিলিয়নের বেশি সেসব কয়েন দীর্ঘমেয়াদী ট্রেডের জন্য উত্তম। এসব প্রকল্পের জন্য আমি ৫০% পোর্টফলিও বরাদ্দ রাখি।
- মধ্যম ঝুঁকি: ১ বিলিয়নের নিচে মার্কেট ক্যাপ সম্পূর্ণ কয়েনগুলোকে আমি এই তালিকায় রাখি। আমি এসব কয়েন কয়েক মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত ট্রেড করি এবং পোর্টফলিওর ৩০% বরাদ্দ রাখি।
- উচ্চ ঝুঁকি: এই তালিকায় থাকা সমস্ত প্রকল্পগুলো সবেমাত্র শুরু হয়েছে এবং এদের উন্নয়ন এখনও চলমান। এসব প্রকল্পের মার্কেট ক্যাপ খুবই কম। সাধারণত বিভিন্ন নিউজ এবং ইভেন্ট এর ভিত্তিতে এসব কয়েন ট্রেড করা হয়। এই তালিকাভুক্ত প্রকল্পের জন্য আমি ১০% পোর্টফলিও বরাদ্দ রাখি।
এবং আমি আমার বাকি ১০% পোর্টফলিও খারাপ পরিস্থিতির জন্য রিজার্ভ করে রাখি।বিনিয়োগ কৌশল: বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নতুন ট্রেডাররা একসাথে সব পোর্টফলিও বিনিয়োগ করে যা একদমই করা উচিত নয়। আমাদের বুঝতে হবে যে ক্রিপ্টো বিনিয়োগ একটি লটারি নয় বরং একটি ব্যবসা যা সময়ের সাথে সাথে ওঠানামার সাথে বৃদ্ধি পায়।
- নিস্ন ঝুঁকি প্রকল্প: এসব প্রকল্পে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে আমি আমার পোর্টফোলিও থেকে ঝুঁকি এবং বরাদ্দের উপর ভিত্তি করে অর্থ রাখি। প্রথম এন্ট্রির জন্য নিম্ন ঝুঁকির প্রকল্পের জন্য ৫০% বরাদ্দ থেকে ১০% এবং প্রতিবার বাজার সংশোধনে সেই বরাদ্দ থেকে ৫% বিনিয়োগ বাড়িয়ে দেই। মুদ্রার দাম যাই হোক না কেন এটি প্রতিটি সংশোধনের জন্য চলমান থাকে।
- মধ্যম ঝুঁকি প্রকল্প: এসব প্রকল্পে প্রথমে মোট বরাদ্দের ৪০ শতাংশ বিনিয়োগ করি। তারপর মার্কেট ২৫-৩০% সংশোধন করলে আরো ৩০ শতাংশ বিনিয়োগ করি।
- উচ্চ ঝুঁকি প্রকল্প: প্রথমেই বরাদ্দের ৫০ শতাংশ বিনিয়োগ করি এবং পরবর্তীতে মার্কেট ৩০% এর বেশি সংশোধন করলে বাকি ৫০ শতাংশ বিনিয়োগ করি। সর্বদা অল্প লাভের সাথে প্রস্থান করি বা যখন ট্রেড ১০ শতাংশ লাভের উপর থাকে তখন থেকে মুনাফা বুকিং শুরু করি।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, আমি স্টপ লস ব্যবহার করি না কারণ আমি মনে করি এটি অর্থ হারানোর একটি প্রমাণিত উপায়। আমি একটি খারাপ ট্রেড থেকে প্রস্থান করার জন্য DCA ব্যবহার করি। আমি মনে করি ক্রিপ্টো মার্কেটে বিনিয়োগর ক্ষেত্রে সবসময় নিজের একটি অর্থ ব্যবস্থাপনার কৌশল থাকা জরুরি।