ব্লক চেইন একটা প্রযুক্তি
Airdrops কি?
Airdrops মূলত Cryptocurrency ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিনামূল্যে Coin বা Token অফার এর আরেকটি নাম।
বিনামূল্যে কয়েন বা টোকেন বিতরন করার উদ্দশ্যে কি? এতে কোম্পানির কি লাভ বা ক্ষতি?
বিনামূল্যে কয়েন বিতরণ কোম্পানির কোন ক্ষতি নেই বরং লাভ হয়।
বিনামূল্যে কয়েন বিতরণ হচ্ছে একটি কোম্পানির এয়ার্ড্রপ অথবা বাউন্টি কাজ সমূহ।
পূর্বের ৫ পৃষ্টায় শুধুমাত্র বাউন্টি/এয়ারড্রপ ও বিটকয়েন/ব্লকচেইন নিয়ে যত পোষ্ট দেখলাম ( যাদের পোষ্ট উল্লেখ করলাম , তারা মনে কষ্ট নিবেন না এবং ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)। এছাড়াও অনেক ভালো ও মানসম্মত পোষ্ট দেখলাম। কিন্তু সকলেই ব্লকচেইন/বিটকয়েন এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মূল বিষয়টাই উল্লেখ করেননি। তাই এই পোষ্টে বর্ণনা করলাম ক্রিপটোগ্রাফি , যা ব্লকচেইনের মূল চালিকাশক্তি। সকলের মধ্যে একটা ভুল ধারণা আছে যে, বিটকয়েন মানে ব্লকচেইন । কিন্তু এইটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা। এর মূল কারণ হলো:
ব্লকচেইন হলো পিটুপি নেটওয়ার্ক, যা ক্রিপটোগ্রাফি পদ্ধতি ব্যবহার করে নেটওয়ার্কের সকল লেনদেন যাচাই করে থাকে।এখন একটা বিষয় জানা দরকার আর সেটি হলো ব্লকচেইন ২ প্রকারের হয়ে থাকে।
(১) ওপেন/মুক্ত ব্লকচেইন : এই ব্লকচেইনের মধ্যে যে কেউ অংশগ্রহণ করতে পারবে এবং এটি নেটওয়ার্কের অন্তর্ভু্ক্ত সকলের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। একজন ব্যক্তি কখনোই এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
(২) প্রাইভেট/নিয়ন্ত্রিত ব্লকচেইন: এই ব্লকচেইনের মধ্যে যে কেউ অংশগ্রহণ করতে পারবে না এবং এটি মূলত কেন্দ্রীয় যেকোনো ব্যক্তি/ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়।
আশা করি, সকলেই বুঝতে পারছেন, কেন বিটকয়েন মানেই ব্লকচেইন নয়। মূলত বিটকয়েন হলো একটা ওপেন/মুক্ত ব্লকচেইন এবং এটি হলো ব্লকচেইনের সর্বপ্রথম ও সর্বশ্রেষ্ট উদাহরণ। এখন আবার প্রশ্ন জাগতে পারে যে, তাহলে প্রাইভেট/নিয়ন্ত্রিত ব্লকচেইন কোনটি? এটার সহজ উদাহরণ হলো সকলের মধ্যে সাড়া জাগানো ফেসবুকের লিব্রা কারেন্সি। এর কারণ হলো একটাই সেটি হলো: আমরা যেমন ইচ্ছে করলেই বিটকয়েন মাইনার কিনে বা নোড ব্যবহান করলেই বিটকয়েন ব্লকচেইনের অংশ হতে পারব, কিন্ত ফেসবুকের লিব্রা ব্লকচেইনের নিয়ন্ত্রণ শুধুমাত্র এর পাটনারদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাই ফেসবুকের লিব্রা কারেন্সি হলো প্রাইভেট/নিয়ন্ত্রিত ব্লকচেইনের মধ্যে পড়ে।আশা করি, সকলের ভ্রান্ত ধারণাটা দূর হয়েছে। এখন ক্রিপটোগ্রাফি কী সেটি নিয়ে আলোচনা করা যাক।
ক্রিপটোগ্রাফি হলো যেকোনো লেখা বা তথ্যকে ইনক্রিপ্ট বা কম্পিউটারের/মেশিনের ভাষায় রূপান্তর করা।সহজ একটি উদাহরণ হলো: আপনি আপনার প্রেমিকাকে মেসেজ পাঠইলেন যে, “বিকেল ৫টায় দেখা করব”। কিন্তু কেউ এই মেসেজটা দেখে ফেলল এবং পরিবর্তন করল, “বিকেল ৪টায় দেখা করব”। এতে আপনার প্রমিকা রূপান্তর করা মেসেজটা পাবে এবং এটি বিপদ ঘটতে পারে। তাই আপনার পাঠানো মেসেজ যেন অন্য কেউ পরিবর্তন করতে না পারে, এজন্য ক্রিপটোগ্রাফি ব্যবহার করা হয়। ক্রিপটোগ্রাফি ব্যবহার করলে আপনার মেসেজটি নিচের মতো সাইফার/হেক্সাডেসিমেল নাম্বারে পরিবর্তন হবে।
আপনার মূল মেসেজ: বিকেল ৫টায় দেখা করব
ইনক্রিপ্টেড মেসেজ: E0a6ace0a6bfe0a695e0a787e0a6b220e0a7abe0a69fe0a6bee0a79f20e0a6a6e0a787e0a696e0a 6be20e0a695e0a6b0e0a6ac
ফলে অন্য কেউ আপনার এই মেসেজটি পড়তে পারবে না বা পরিবর্তন করতে পারবে না।এই ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্লকচেইনে ব্যবহার হওয়ার কারণেই ব্লকচেইন হ্যাক করা কখনোই সম্ভব না। এখন অনেকেই বলতে পারেন যে , অনেক এক্সচেন্জ সাইট থেকে বিটকয়েন হ্যাক হয়। এইটা যদি আপনাদের মাথায় আসে , তাহলে বলব যে আপনারা ভুল ধারণার মধ্যে আছেন। কারণ বিটকয়েনের ব্লকচেইন হ্যাক হয় না বরং এক্সচেন্জ সাইটটি হ্যাক হয় এবং সাইটি কখনোই বিটকয়েন ব্লকচেইনের অংশ নয়।
আজকে এইটুকু তথ্য আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করলাম।আমি অলস হওয়ার কারণে এতটুকুই লেখলাম । আশা করি, সকলেই বুঝতে পেরেছেন । যদি কোনো প্রশ্ন থাকে ,তাহলে প্রশ্ন করুন । আমি যতটুকু জানি , সেখান থেকে আপনাদের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। এরপরের পোষ্টে জানাবো ,ব্লকচেইনের লেনদেনটা কীভাবে জমা হয় এবং এতে ক্রিপ্টোগ্রাফি কেমন অবদান রাখে।